টেক কেয়ার


আজ আমার দ্বিতীয় ব্রেকআপ। প্রথমটা টেক কেয়ারের অভাবে। আজকেরটা অতি টেক কেয়ারে। প্রেমটা শুরুই হয়েছিল টেক কেয়ার দিয়ে। প্রথম প্রেমের বিরহে উদাসীন হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ইটের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে প্রায় উল্টে পড়েছিলাম। এমন সময় এক বঙ্গ ললনা এগিয়ে এসে কিন্নর কণ্ঠে বলে উঠল, ‘আহা! খুব ব্যথা পেয়েছেন নিশ্চয়ই? দেখি, দেখি, নখটা তো উল্টে গেছে মনে হচ্ছে। আসুন সামনের ফার্মেসিটায় যাই।’
অনন্ত জলিলের সিনেমার মতো ব্যথায় প্রাণটা টা টা বাই বাই বলে চলে যাচ্ছিল। কিন্নরীর কথা শুনে মুখ কালো করে দেহে ফিরে এলো। সেই থেকে শুরু হলো কেয়ারিং।
—হ্যালো, বাবু ঘুম থেকে উঠছ?
—না, উঠি নাই।
—তাইলে উঠে পড়ো।
—না, আরেকটু ঘুমাব।
—এত বেলা পর্যন্ত ঘুমানো ঠিক না।
—আচ্ছা, আর দুই মিনিট।
—ঠিক আছে। দুই মিনিট পর আমি কিন্তু আবার ফোন দেব।
ঠিক দুই মিনিট পর আবার ভিডিও কল। যেন স্টপওয়াচ হাতে নিয়ে বসে ছিল।
—বাবু উঠছ?
—হ্যাঁ, উঠছি।
—ব্রাশ হাতে নিছ?
—নিছি।
—পেস্ট কতটুকু নিবা জানো?
—কতটুকু?
—একটা মটরদানার সমান।
—সেটা ক্যামনে মাপব?
—একটা মটরদানা হাতে নিয়ে দেখে নাও।
—এত সকালে মটরদানা কই পাব?
—রান্নাঘরে গিয়ে খোঁজ করো।
আমি ব্রাশ-পেস্ট ফেলে রান্নাঘরে গেলাম মটরদানা খুঁজতে। মটরদানা তো পেলামই না, উল্টা ডিব্বাডাব্বা এলোমেলো করে আম্মার দৌড়ানি খেয়ে এলাম। এরপর নাশতার টেবিলে আবার ভিডিও কল।
—বাবু, নাশতা করতেছ?
—হুঁ।
—কী খাচ্ছ?
—ডিম, পরোটা।
—পরোটা তেল ছাড়া, না তেলসহ?
—তেলসহ।
—তোমার এমনিতেই ওজন বেশি। তারপর আবার তেলসহ পরোটা। যাও, চেঞ্জ করে আনো।
আমি আম্মার কাছ থেকে কাকুতিমিনতি করে একটা তেল ছাড়া পরোটা নিলাম।
—তেল ছাড়া পরোটা নিছ?
—হ্যাঁ।
—সঙ্গে সালাদ কই? শসা, লেবু, লেটুসপাতা?
—নিতে ভুলে গেছি।
—সকালের নাশতায় সালাদ থাকবে না—এটা কী করে হয়!
—এগুলা বাসায় নাই।
—এইমাত্র বললা নিতে ভুলে গেছ? এখন বলতেছ নাই।
—আসলেই নাই।
—নাই তাতে কী? নিচে বাজার। এক দৌড়ে গিয়ে নিয়ে এসো।
—দেরি হয়ে যাবে, জান। ক্লাস মিস হবে।
—আচ্ছা, তাহলে এক কাজ করবে। যাওয়ার সময় সবজিওয়ালার কাছ থেকে দুটি শসা আর কয়েক পিস লেটুস কিনে খেতে খেতে চলে যাবে। কাটার ঝামেলা আছে, সো লেবু বাদ থাক। খাওয়ার সময় ভিডিও কল দেবে কিন্তু।
সেদিন রাস্তায় আমাকে শসা আর লেটুসপাতা খেতে দেখে পরিচিতরা কেমন কেমন করে তাকাচ্ছিল। ভিডিও কলের সিস্টেম না থাকলে হয়তো কোনোভাবে ফাঁকি দেওয়া যেত। এমনকি এই কথা আম্মার কান পর্যন্ত গেল। বহুত ভগিজগি করে আম্মাকে বোঝাতে হয়েছে।
এভাবে পদে পদে টেক কেয়ারের যন্ত্রণায় আমি হাঁপিয়ে উঠলাম। অবশেষে আজকে ব্রেকআপের ঘোষণা দিলাম। মরি আর বাঁচি, যা থাকে কপালে।
—তোমাকে কয়েকটা কথা বলা দরকার।
—হ্যাঁ বাবু, বলো। কিন্তু তার আগে বলো তোমার মুখটা শুকনা লাগতেছে কেন?
—আমি ব্রেকআপ করতে চাই।
—ওমা, কেন?
—আসলে আমি তোমার যোগ্য না। তুমি আমার চেয়ে অনেক ভলো ডিজার্ব করো, ব্লা ব্লা...।
আমি ভেবেছিলাম, কান্নাকাটি করে একটা সিনক্রিয়েট করবে। তা না করে উল্টো ব্রেকআপের পরবর্তী অবস্থা মোকাবেলা করার একগাদা উপদেশ দিয়ে চলে গেল। আরো বলল, ফোন করে খোঁজ নেবে ব্রেকআপ-পরবর্তী কাজগুলো আমি ঠিকঠাক করছি কি না।

কয়েকটি দমফাটানো মজার কৌতুক পর্ব-১



  • দুই সন্তানের বাবা

পল্টু প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় রসিকতা করে তার স্ত্রীকে বলে-
পল্টু : বিদায়, ওগো চার সন্তানের মা।
একই কথা প্রতিদিন শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে একদিন পল্টুর স্ত্রী সত্যটা বলেই ফেলল-
স্ত্রী : টা-টা, ওগো দুই সন্তানের বাবা।


  • পাশের বাড়ির আপুর সাথে

ছেলে : মা মা, আজকে কি ঈদ?
মা : না তো, কেন কি হইছে?
ছেলে : না মানে, ভাইয়াকে দেখলাম পাশের বাড়ির আপুর সাথে কোলাকুলি করছে।
মা : কি বললি!


  • কবরে খুব গরম লাগতেছিলো

পল্টু একবার পূর্ণিমা রাতে এক গোরস্থানের পাশ দিয়ে একা যাচ্ছিল। তার খুব ভয় ভয় লাগছিল! হঠাৎ দেখলো যে, এক লোক কবরের পাশে বসে আছে! লোকটিকে দেখে তার কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল-
পল্টু: একা একা ভয় লাগছিল! আপনাকে দেখে একটু সাহস হলো! কিন্তু এ সময় আপনি এখানে কী করেন? লোক: কবরে খুব গরম লাগতেছিল! তাই বাইরে এসে একটু বাতাস খাচ্ছি!


  • শরীরের কোন অংশ সুন্দর?

প্রেমিকা: জানু, এবার ভালো করে দেখে বলো না, আমার শরীরের কোন অংশ সবচেয়ে সুন্দর?
প্রেমিক: হুম, সেটা হলো এমন একটা জিনিস; যেটা দেখতে নারিকেলের মতো গোল ও সাদা। তার ভেতরে আরো দুইটা বৃত্ত আছে, বৃত্তের উপর ডট।
প্রেমিকা: শয়তান! কী বলতে চাস?
প্রেমিক: সেটা হলো তোমার চোখ।

বিয়ের আগে প্রেম



স্বামী : আমাকে সত্যি করে বলো, বিয়ের আগে তুমি কয়জনের সাথে প্রেম করেছো?
স্ত্রী : ঠিক আছে দাঁড়াও। এই যে ড্রামটা দেখ। আমি যত ছেলেদের সাথে প্রেম করতাম, ততটি চাল এটাতে ফেলেছিলাম।
স্বামী গিয়ে দেখল ওটাতে মাত্র দু’টি চাল আর ২শ’ টাকা আছে। দেখে এসে বলল-
স্বামী : ও! মাত্র দু’জনের সাথে প্রেম করেছো? এই যুগে এগুলো কিছু না।
স্ত্রী : তাই?
স্বামী : কিন্তু এই দুইশ’ টাকা কিসের?
স্ত্রী : টাকাটা কিসের বুঝলে না?
স্বামী : না তো!
স্ত্রী : গত সপ্তায় এই ড্রাম থেকে চার কেজি চাল বিক্রি করেছিলাম। এটা তারই টাকা।

বাবার কথায় ছাদ থেকে লাফ দিলো ছেলে


বাবার কথায় ছাদ থেকে লাফ দিলো ছেলে
বাবা ব্যবসার দায়িত্ব দিচ্ছেন ছেলেকে। তাকে নিয়ে ছাদে গেলেন। তারপর বললেন-
বাবা: ছাদের একদম ধারে গিয়ে দাঁড়াবে এবং আমি যখন বলব লাফ দাও, তখন লাফ দেবে।
ছেলে: সে কী বাবা, তিন তলা থেকে লাফ দেব? আমি মারা যাব যে!
বাবা: শোন, ব্যবসায় উন্নতি করতে চাও তো, আমার ওপর বিশ্বাস আছে?
ছেলে: হ্যাঁ।
বাবা: তাহলে লাফ দাও।
ছেলে লাফ দিলো এবং যথারীতি মাটিতে পড়ে দুই পা ও এক হাত ভেঙে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে রইল। বাবা দ্রুত সিঁড়ি ভেঙে ছেলের কাছে ছুটে গেলেন এবং বললেন, ‘ব্যবসায় এটাই তোমার প্রথম শিক্ষা-কাউকে বিশ্বাস করবে না!’
বিয়ে করে ছুটি নষ্ট করব না
কর্মচারী: স্যার, পাঁচ দিনের ছুটি চাই।
বস: কেন? মাত্রই তো তুমি ১০ দিন ছুটি কাটিয়ে ফিরলে।
কর্মচারী: স্যার আমার বিয়ে।
বস: বিয়ে করবে ভালো কথা। তো এতদিন ছুটি কাটালে, তখন বিয়ে করনি কেন?
কর্মচারী: মাথা খারাপ? বিয়ে করে আমার সুন্দর ছুটির দিনগুলো নষ্ট করব নাকি?
****
ছিনতাইকারির মাধ্যমে ধার শোধ
দুই বন্ধু একটা নিরিবিলি পার্কে বসে গল্প করছে। ১ম বন্ধু ২য় বন্ধুর কাছে ১ হাজার টাকা পায় কিন্তু এখনো শোধ করে না।
১ম বন্ধু: কিরে তুই টাকা দেস না কেন?
২য় বন্ধু: দোস্ত দিমু, হাতে টাকা নাই।
একটু পরেই ৫-৬ জন ছিনতাইকারি এলো এবং পেটে ছুরি ধরে বলল, ‘যা আছে সব দে!’ ২য় বন্ধু ১ হাজার টাকা বের করে ১ম বন্ধুর হাতে দিয়ে বলল, ‘এই নে তোর টাকা! তোর সাথে আমার লেনদেন শেষ।’

কয়েকটি রসালো কৌতুক ।। পড়ুন আর হাসুন


ব্যর্থ হই নি

 সুন্দর রোগীঃ ডাক্তার আমি শুধুমাত্র একটি জিনিসই চাই
ডাক্তারঃ সেটা কি?
রোগীঃ বাচ্চা
ডাক্তারঃ আপনি নিশ্চিত থাকুন এ ব্যাপারে আমি একবারও ব্যর্থ হইনি

ওদের বাবাকে

হঠাৎ করে গৃহকর্ত্রী বুঝতে পারলেন তাঁর তিন ছেলের যে কোন একজনের সাথে বাড়ির কাজের মেয়েটির সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্তু কোন ছেলের সাথে তা আন্দাজ করতে ব্যর্থ হয়ে শেষমেষ কাজের মেয়েটাকে ডেকে ঠাট্টাচ্ছলে জিজ্ঞেস করলেন ধরো আমার যে কোন এক ছেলের সঙ্গে তোমাকে বাইরে যেতে দেওয়া হলো তুমি কাকে বেছে নেবে? – ঘুরতে আমি তিনজনের সাথেই রাজি আছি তবে সময়টা উপভোগ করার জন্য ওদের বাবাকেই আমি বেছে নেব ।


ব্ল্যাংক চেক

ভ্যালেন্টাইন ডেতে স্ত্রীর কাছে আসতে না পেরে একটা ব্ল্যাঙ্ক চেকে এক হাজার চুমু লিখে স্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন স্বামী। দুদিন পর স্বামী ফোন করলেন, আমার চেক পেয়েছিলে? হ্যাঁ, আমাদের পাড়ার নজরুল ভাইয়ের কাছে ভাঙিয়ে নিয়েছি।

একটি তৈলাক্ত কাহিনি

সকালবেলা। সবে চায়ের পেয়ালাটি হাতে নিয়ে বাইরের ঘরে এসে বসেছি, সঙ্গে সঙ্গে একদিকে খোলা জানালা দিয়ে পড়ল পরপর দুখানা খবরের কাগজ, অন্যদিকে সদরের নাম-ঘণ্টাটা করে উঠল করর করর।

তারপরই এসে ঢুকলেন কিশোরীবাবু। মেজো কাকার বন্ধুত্বসূত্রে রোজই আসেন তিনি। দুই কাপ চা খেয়ে এবং খবরের কাগজখানা উল্টেপাল্টে দেখেই চলে যান। যেদিন বাড়ি থাকি, এটা-সেটা নিয়ে গল্প ফাঁদেন। সেদিন বেরিয়ে যাই, একাই বসে বসে পাঠ ও পান সেরে চলে যান।
আজ আছি, তাই আমাকে দেখে একগাল হেসে বললেন, ডিগবয় গিয়েছিলে? চমত্কার জায়গা।
বললাম—কোনো সময় গিয়েছিলেন বুঝি?
কিশোরীবাবু বললেন—শুধু যাওয়া? ডিগবয় তিনসুকিয়া নাহরকাটিয়া মার্গারিটা সব তো তৈরি হলো আমারই চোখের ওপর। কী ছিল আগে ওসব জায়গায়? শুধু বন, পাহাড় আর তাতে বাঘ, হাতি, গণ্ডার ও পাইথন। ওখানে যে তেল আছে, আর সে তেল যে কোটি কোটি টাকার সম্পদ, এ কে জানত?
ততক্ষণে চা এসে গেছে। পেয়ালায় গোটা দুই চুমুক দিয়ে কিশোরীবাবু বললেন—একটিমাত্র মানুষের বুদ্ধিতে এত বড় সোনার খনি আবিষ্কার হয়েছে, আর তার পেছনে ছিলেন একটি বাঙালি যুবক।
কৌতূহলী হয়ে বললাম, কী রকম? বলুন তো শুনি একটু।
কিশোরীবাবু একটানা তিন-চার চুমুক চা গলাধঃকরণ করে বললেন—ফেয়ারবোর্ন সাহেবের নাম শুনেছ তো? তিনি ছিলেন বিখ্যাত শিকারি। আসামে এসেছিলেন হাতির দাঁত ও বাঘের চামড়ার ব্যবসা করবেন বলে। গৌহাটিতে ছিল তাঁর অফিস, আর সেই অফিসের হেডক্লার্ক ছিলাম আমি।
তারপর?
তারপর ইতিহাসের দেবতা অদ্ভুত কাজ করিয়ে নিলেন দুজনকে দিয়ে। অথচ অকৃতজ্ঞ ইতিহাস দুজনকেই কেমন ভুলে গেছে দেখ। ফেয়ারবোর্ন ইংরেজ সন্তান, তিনি তবু লাখ দুই টাকা বাগিয়ে নিয়ে দেশে গেলেন, আর আমি স্রেফ গলাধাক্কা খেয়ে রিক্ত হস্তে কলকাতায় এসে ফ্যা ফ্যা করে ঘুরছি আজ ২২ বছর।
কিশোরীবাবু গল্পের এখানেই গলদ। তিনি যা নিয়েই কাহিনি ফাঁদুন, শেষ পর্যন্ত তা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর আপন জীবনী। তখন তাঁকে মোড় ফিরিয়ে দিতে হয়, নইলে মূল গল্পটা একেবারে মাঠে মারা যায়।
আস্তে আস্তে বললাম—হ্যাঁ, এবার বলুন ডিগবয় শহর তৈরির ইতিহাস। খুব আগ্রহ হচ্ছে শুনতে।
কিশোরীবাবু বললেন, হ্যাঁ গো, তাইতো বলছি। আচ্ছা, ডিগবয় কথাটা লক্ষ করেছ ভালো করে? ডিগ আর বয়, তার মানে বাচ্চা লোক খোঁড়। কিন্তু কী খুঁড়বে? কে বলল এই কথা? কেন বলল? সেটাই হলো ইতিহাস... শোন বলছি।
এই বলেই হাত বাড়ালেন তিনি। খবরের কাগজের ভেতরের অংশটা তাঁকে ধরিয়ে দিলাম, আর বাইরের অংশটা তাঁর হাত থেকে নিয়ে বললাম—বলুন কাকাবাবু।
কিশোরীবাবু বললেন—সেটা বোধ করি জানুয়ারির শেষ কি ফেব্রুয়ারির গোড়া। হঠাত্ সাহেবের শখ হলো শিকারে যাবেন। সার্কাসের জন্য একটা জ্যান্ত ভালুকের, আর একটা অজগরের চামড়ার অর্ডার এসেছিল বিদেশ থেকে। আসল কারণ অবশ্য সেটাই।
সাহেব বললেন—কিশুরী, বি রেডি ম্যান। আমি সোমবার সকালেই রওনা হব।
বহুত আচ্ছা সাহেব, বলে তোড়জোড় শুরু করে দিলাম। তারপর দুজন আর্দালি, জঙ্গল ঠেঙানোর লোক ছয়জন, দুটি হাতি আর বন্দুক ও খানাপিনার পুঁজি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম সোমবার ভোরে। এখন যেখানে তেল শোধনের কারখানা, সেখানে তাঁবু পড়ল দুপুর নাগাদ। সাহেব ঘোড়ায় আসবেন, তাঁর আসতে তাই বিকেল হয়ে যাবে।
রান্নাবান্না হচ্ছে। আমার তো জানোই, চিরদিন পড়ুয়া স্বভাব, একখানা বই খুলে একটা মেহগিনিগাছের নিচে ইজিচেয়ারে গা এলিয়ে দিয়েছি। হঠাত্ বেজে উঠল ঢোল ডগর এবং ফটাফট বন্দুকের আওয়াজ হলো তাঁবুর এপাশ-ওপাশ থেকে।
ভারি জমে গিয়েছিলাম বইখানা নিয়ে। বিরক্ত হয়ে উঠে এলাম। হাঁপাতে হাঁপাতে পিয়ন পানিগ্রাহী বলল—হাতি বাবু জংলা হাতি। এখনি তাঁবুফাঁবু তছনছ করে দিত। তাই সবাই মিলে খেদিয়ে দিলাম তাকে। ঢুলিদের নিয়ে গিরিধারী জঙ্গলে গেছে বন্দুক হাতে তাকে পিছু তাড়া করে। নইলে ফের যদি ফিরে আসে।
বইয়ের নেশা ছুটে গেল। জংলা হাতির স্বভাব তো আমি জানি। ভীষণ গোঁয়ার ওরা। আর কিছুই ভোলে না। যার ওপর রাগ হয় তাকে খতম করবে নয়তো নিজে খতম হবে, তবেই ছাড়বে।
বললাম—একটানা অনেকক্ষণ ফাঁকা আওয়াজ করো বন্দুকের। তা হলেই ঘন বনে ঢুকে পড়বে।
চারটের একটু আগে সাহেব পৌঁছলেন। তাঁর সাদা টাট্টুর পিঠে মস্ত এক টোটার বাক্স।
আমাকে বললেন—খাওয়া হয়েছে কিশুরী?
বললাম—হ্যাঁ সাহেব, আপনার অনুগ্রহে।
আমার পিঠে আলতো করে একটা থাবা মেরে ফেয়ারবোর্ন বললেন—সব ঠিক আছে তো? কাল কিন্তু সূর্য ওঠার আগেই...
আমি বললাম—বহুত আচ্ছা। তার পরেই আমতা আমতা করে বুনো হাতি বেরোনোর ঘটনাটা বললাম।
সাহেব সঙ্গে সঙ্গে বললেন—কাম এলং কিশুরী। চলো হাতি আসার পথটা একটু পরীক্ষা করে দেখি। তাহলে এই পথ ধরেই এগোতে সুবিধা হবে। তা ছাড়া...
দুজনে চলেছি। বন্দুক হাতে সাহেব আগে আগে,  পেছনে আমি। বুক দুরদুর করছে।
হঠাত্ দেখলাম, মাটিতে গোল গোল পায়ের ছাপ। হাতির পা ওটা, বুঝতেই পারছ। কিন্তু শুকনো মাটির ওপর তেলতেলে হয়ে রয়েছে কেন ছাপগুলো?
বললাম—স্যার স্যার, দেখুন, অয়েলি অয়েলি ফুটপ্রিন্টস অব দি এলিফ্যান্ট। হাতির তেলতেলে পায়ের ছাপ।
সাহেব ঝুঁকে দেখলেন। একটা দাগে আঙুল ঘষে সেটা নাকের কাছে বার দুই ধরলেন। তারপর বললেন—কিশুরী, আনটোল্ড ওয়েলথের অকল্পনীয় ঐশ্বর্যের নিশানা মনে হচ্ছে এগুলো। চলো গভীরে, শিকারের চেয়ে অনেক বড় কাজই হয়তো সামনে এসে পড়েছে। কিন্তু চুপ, কেউ যেন না জানে।
ওই চিহ্ন ধরে দুজনে মাইল দুই চলে গেলাম পাহাড়, জঙ্গল ও কাঁটা খোঁচা গ্রাহ্য না করে। তার পরই চারদিকে পাথুরে প্রাচীরের মাঝে একটা ফাঁকা মতো জায়গায় দেখলাম ঝর্ণার মতো বেগে ফিনকি দিয়ে ঠেলে উঠছে একটা তরল জিনিস এবং তা থেকে আসছে কেমন একটা ভোঁটকা গন্ধ।
বললাম—হোয়াটস দিস্ সাহেব? এটা কী?
সাহেব বললেন—পেট্রল! এই খনিজ তেলে মোটর চলে, এরোপ্লেন চলে। দূরপ্রাচ্য, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আর রাশিয়ায় আছে এই সম্পদ। দেখা যাচ্ছে, আছে ভারতেও।
তার পরেই বললেন—আমরা কোটি কোটি টাকা কামাব এই থেকে। গলাটা কেঁপে উঠল তাঁর উত্তেজনায়।
পরদিন সকালে একজন কুলি লাগান হলো আশপাশ থেকে জোগাড় করে এনে। সে গাইতি কোদাল নিয়ে খুঁড়তে লাগল, আর ফেয়ারবোর্ন সামনে দাঁড়িয়ে হাঁকতে লাগলেন ডিগবয়, ডিগ! এই ডিগবয়ের আদি পর্ব বুঝলে।
তারপর কী হলো, জিজ্ঞেস করলাম আমি। পকেট থেকে কৌটা বের করে একটি পান সশব্দে মুখে পুরে কিশোরীবাবু বললেন—কী আর হবে? খবর পেয়ে গভর্নমেন্ট এসে আগলে বসল। সাহেবকে ভিড়তেই দিল না আর ধারেকাছে। কিন্তু ইংরেজ বাচ্চা তো! ঢের লেখালেখি করে ওই টাকাটা আদায় করলেন তিনি। আর এই শর্মারাম, গরিবের ছাওয়াল, শুধু হাতে ঘরে ফিরল।
এই পর্যন্ত বলেই কিশোরীবাবু ভাঁজ করা কাগজের বাকিটা ফেরত দিলেন এবং ছাতাটা বগলে নিয়ে নিঃশব্দে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে।
ছোট ভাই মোহিনী মুখে একটা বিদ্রুপের আওয়াজ করে বলল—সব বাজে কথা! একেবারে বোগাস!

কানাডায় এক বাংলাদেশি


একজন ব্যাংকার বাংলাদেশে প্রাইভেট ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কানাডায় গিয়ে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে সেলসম্যান হিসেবে যোগ দিলেন। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কী কোনো চাকরির অভিজ্ঞতা আছে?’
তিনি জানালেন, ‘আমি দেশে প্রাইভেট ব্যাংকে কাজ করতাম।’
দেখা গেল, চাকরির প্রথম দিনে তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করলেন। সন্ধ্যা ৬টায় ছুটির সময় স্টোরের মালিক তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজ তুমি কজন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করেছ?’

তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি আজ সারা দিনে একজন ক্রেতার কাছে বিক্রি করেছি।’ স্টোরের মালিক আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘মাত্র একজন? এখানকার প্রত্যেক সেলসম্যান দিনে ২০ থেকে ৩০ জন ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করে।’ স্টোরের মালিক একটু বিরক্ত সুরে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তা তুমি কত ডলারের পণ্য বিক্রি করেছ?’

তিনি বললেন, ‘৩,৭৬,৫৪৩ ডলার।’

স্টোরের মালিক অবাক হয়ে বললেন, ‘কী! এত ডলার! এটা তুমি কিভাবে করলে?’

তিনি বললেন, ‘ওই ক্রেতার কাছে প্রথমে মাছ ধরার একটি ছোট্ট বড়শি বিক্রি করেছি। তারপর একটি বড় ও একটি মাঝারি বড়শি বিক্রি করলাম। এরপর একটি বড় ফিশিং রড আর কয়েকটি ফিশিং গিয়ার বিক্রি করলাম। তারপর আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, আপনি কোথায় মাছ ধরবেন? তিনি বললেন, সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায়। তখন আমি তাকে বললাম, তাহলে তো আপনার একটি নৌকার প্রয়োজন হবে। আমি তাকে নিচতলায় নৌকার ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। ভদ্রলোক সেখান থেকে কুড়ি ফুট দীর্ঘ দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট নৌকা কিনলেন। এরপর আমি তাকে বললাম—এই নৌকাটি তো আপনার ভক্সওয়াগন গাড়িতে ধরবে না, একটা বড় গাড়ির প্রয়োজন! আমি ভদ্রলোককে অটোমোবাইল ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। আমার পরামর্শে তিনি নৌকাটি বহন করার উপযোগী একটি গাড়ি বুকিং দিলেন। তারপর আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম—মাছ ধরার সময় কোথায় থাকবেন? তিনি জানালেন, এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা করেননি। আমি তাঁকে ক্যাম্পিং ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেলাম। তিনি আমার পরামর্শমতো ছয়জন লোক ঘুমানোর উপযুক্ত একটি ক্যাম্প তাঁবু কিনলেন। সব শেষে আমি তাঁকে বোঝালাম—আপনি যখন এত কিছু কিনেছেন, এখন কিছু খাবার ও পানীয় কিনে নেওয়া উচিত। ভদ্রলোক ২০০ ডলার দিয়ে কিছু মুদিদ্রব্য ও দুই কেইস বিয়ার কিনলেন!’

এবার স্টোরের মালিক একটু দমে গিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘যে লোকটা একটি বড়শি কিনতে এসেছিল, তুমি তাকে দিয়ে এত কিছু কেনালে কিভাবে?’

ব্যাংকার ভদ্রলোক বললেন, ‘না স্যার, ওই ভদ্রলোক শুধু মাথা ব্যথার ওষুধ কিনতে এসেছিলেন। আমি তাঁকে বোঝালাম—মাছ ধরলে মাথা ব্যথার উপশম হবে।’

স্টোরের মালিক এবার জানতে চাইলেন, ‘এর আগে তুমি কী কাজ করতে?’

তিনি বললেন, ‘আমি বাংলাদেশে একটি প্রাইভেট ব্যাংকে ছিলাম। ব্যাংকের ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিভিন্ন স্কিম করানোর পরামর্শ দিতাম।’

আজকালকের ছেলেদের কোনো বিশ্বাস নাই

   (-_-)   আজকালকের ছেলেদের কোনো বিশ্বাস নাই!   (-_-)   দুই মেয়ে কথা বলছে-
১ম মেয়ে: আজকালকের ছেলেদের কোনো বিশ্বাস নাই। আমি তো আজকে থেকে ওর মুখও দেখতে চাই না…

২য় মেয়ে: কি হইছে? তুমি কি ওকে অন্য কোনো মেয়ের সাথে দেখে ফেলছ?
১ম মেয়ে: আরে না! ও আমারে আরেক ছেলের সাথে দেখে ফেলছে…। কালকে ও আমারে বলছিল যে, ও নাকি শহরের বাইরে যাবে। তাহলে সে আমাকে কিভাবে দেখল। মিথ্যুক, বদ, ধোঁকাবাজ…
   (-_-)   সাবধান আর নিচে নামিস না   (-_-)   এক শিক্ষক ক্লাসে ছাত্রদের জিজ্ঞেস করেন - এমন জিনিসের নাম বল তো যা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিতি হয় ।
ছাত্র - চুল
শিক্ষক - কিভাবে ?
ছাত্র - মাথায় আমরা বলি চুল , চোখের উপরে থাকলে বলি ভ্রু, ঠোটের উপরে থাকলে বলি গোফ , গালে ও চিবুকে থাকলে বলি দাড়ি । বুকে থাকলে বলি লোম এবং ……
শিক্ষক - সাবধান আর নিচে নামিস না !!!

অতিথি নারায়ণ || হাস্যরসাত্মক গল্প পরে মজা পাবেন


একটি স্কুলে চাকরি করি। সেই সুবাদে প্রায় অপ্রত্যাশিত ছুটিছাঁটা পাওয়া হয়ে যায়। এই যেমন গরমের ছুটি, শীতের ছুটি, বর্ষার ছুটি, বসন্তের ছুটি লেগেই আছে। করপোরেট জগতের অন্য বন্ধুরা আমার ছুটির এহেন বহর দেখে হিংসার আগুনে জ্বলতে জ্বলতে প্রায়ই গালিগালাজ করে। স্কুলে মিড টার্মের পরেই এ রকম ১০ দিনের একটা ছুটি পাওয়া গেল। আমিও বেশ কিছু মুভি নামিয়ে, কিছু গল্পের বই কিনে কোমরে লুঙ্গি বেঁধে ছুটি উপভোগের জন্য প্রস্তুত হলাম। ছুটির প্রথম দিনে ঘুম ভাঙল তীক্ষ কলিংবেলের শব্দে। কানে বালিশচাপা দিয়েও রক্ষা নেই, বেল বেজেই চলছে। মোবাইলে দেখি সকাল ৭টা। ‘এই ৭টা বাজে কোন হালায় এলো’—গজগজ করতে করতে দরজা খুলতেই আমার শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেল। গ্রাম থেকে গেদু চাচা এসেছেন। পান খাওয়া লাল দাঁত দেখিয়ে তিনি বললেন, ‘বাজান আছ কেমুন?’

আমি ঢোক গিলে বললাম, ‘ভালোই ছিলাম চাচা।’
তিনি বাসার ভেতরে পা দিয়েই বিশাল দুটি হাঁস কার্পেটের ওপর রেখে দিলেন। ওরা দুজনই মনে হয় অনেকক্ষণ ধরে টয়লেট চেপে রেখেছিল। আমাদের লাল রাজকীয় কার্পেট দেখে ওরা পিচিক পিচিক করে কাজ সেরে ফেলল। এরই মধ্যে আমাদের কাজের ছেলে মতি চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে এলো। কার্পেটের ওপর হাঁস আর হাঁসের মল দেখে সে আঁতকে উঠল, ‘আরে করছেন কী বাইজান? আম্মায় দেখলে তো সাড়ে সর্বনাশ!’

চাচা বললেন, ‘এই বেডা তুই কেডা? এইসব ভিত্রে নিয়া যা, আর এক গেলাস ঠাণ্ডা ফানি আন। ভ্যানভ্যান করস ক্যান?’

মতি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকাল। আমি হাঁসগুলোর দিকে তাকালাম। হাঁসগুলো আমাদের বিশাল টিভি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকল।

আমি রুমে ঢুকে ফেসবুক থেকে আমার স্ট্যাটাস সরিয়ে ফেললাম। নিশ্চয়ই সবার নজর লাগছে। না হলে এই সময় ‘গোঁদের উপর বিষফোঁড়া’ গেদু চাচা কেন এলো! এর আগে একবার তিনি সাত দিনের জন্য এসেছিলেন। জীবন ছেড়াবেড়া করে দিয়ে গেছেন।

আমি বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছি। এপাশ থেকে ওপাশ ফিরতেই দেখি গেদু চাচা এসে হাজির, ‘কী ব্যাপার ভাতিজা। এই অবেলায় ঘুমাইতেছ ক্যান? অবেলায় ঘুমাইলে তো স্বাস্থ্য খারাপ হইয়া যাইব। আমারে দেখো! এই বয়সেই ভোর চাইরডায় উঠি। মনে রাখবা, স্বাস্থ্যই হইলো ধন।’

আমি ধন আর সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে উঠে পড়লাম। আব্বা-আম্মার রুমে গিয়ে বললাম, ‘গেদু চাচা আসছে কেন?’



আম্মা দাঁত দিয়ে জিহ্বা কেটে বলল, ‘এইসব কী কথা! উনি চিকিত্সা করাতে আসছেন।’ ‘ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিত্সা করাতে বলো। টাকা যা লাগে আমি দেব।’

আব্বা রেগে গিয়ে বলল, ‘কী উল্টাপাল্টা কথা বলতেছস? উনি এখানে থাকবে ওনার মতো। তোর সমস্যা কী? যা, রুমে যা।’

আমি রুমে গিয়ে বিষণ্ন বদনে বসে আছি। সকাল বাজে সাড়ে ৭টা। গভীর রাত পর্যন্ত মুভি দেখছি। ভাবছিলাম, দুপুর পর্যন্ত ঘুমাব। মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। রুমে মতি এসে বলল, ‘ভাই, কাম সারছে!’

‘কী হইছে?’

‘গেদু চাচা নাকি আপনার গোসলখানা ব্যবহার করব।’



‘ক্যান, গেস্টরুমেরটা কী হইছে?’

‘ওইটার কল নষ্ট।’

‘কল নষ্ট, এত দিন ঠিক করাস নাই ক্যান?’ আমি চেঁচিয়ে বললাম। খানিক বাদেই গেদু চাচা হাজির। গামছা, লুঙ্গি, সাবান, তেল—বিশাল আয়োজন, ‘বাজান, তোমার কাছে গ্যাস্ট্রিকের দাবাই আছে? প্যাটে কিমুন গ্যাস হইছে।’

এই বলে গেদু চাচা আমার বাথরুমে ঢুকে পড়ল। আর তার পেটে যে আসলেই গ্যাস হইছে, সেটা নানা শব্দ করে বোঝাতে লাগল।

‘বুইড়া বেডা করে কী?’ এই সব শব্দ শুনে অবাক মতিও।

গেদু চাচা বাথরুম থেকে বের হওয়ার পর বাথরুমে গোটা অর্ধেক এয়ার ফ্রেশনার দিয়ে তবে রক্ষা।

নাশতার টেবিলে গেদু চাচা গোটা চারেক পরোটা, এক বাটি মাংস, একটি সিদ্ধ ডিম, দুই পিস সাগর কলা খেয়ে বলল, ‘বয়স হইয়া গেছে, আগের মতো খাইতে আর পারি না।’ এই শুনে মতি হাত থেকে গ্লাস ফেলে দিল।

‘এই বেডা করছ কী? সাবধানে চল।’

এর মধ্যেই পাশের বাসার তিন্নি এলো। তিন্নি মেয়েটার সঙ্গে আমি একটা সম্পর্ক ধীরে ধীরে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। মেয়েটা ভার্সিটিতে পড়ে। আমার থেকে প্রায়ই গল্পের বই নিতে আসে। এভাবে বই আদান-প্রদানের মধ্যেই সম্পর্ক করার চেষ্টা। এর মধ্যেই সে এলে গেদু চাচা দরজা খুলে দিল।

‘রায়হান ভাইয়া আছে?’ গেদু চাচাকে তিন্নি জিজ্ঞেস করল।

‘রায়হান তো টাট্টিখানায়। মনে হয় হাগতাছে। তুমি কে গো মা?’

পুরো ঘটনা দেখে মতি দৌড়ে গিয়ে আমার বাথরুমের দরজায় নক করল, ‘বাইজান তুরন্ত বাইর হন। গেদু চাচা তিন্নি আফারে কী কয় দেইখা যান।’

আমি কোনোভাবে কাজ সেরে বের হয়ে গেদু চাচাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মেয়েটা কই?’
‘চইলা গেছে। আমি কইছি তুমি টাট্টিখানায়!’
আমি রুমে গিয়ে মতির থেকে সব শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম। তিন দিনের মাথায় যখন গেদু চাচার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়লাম, তখনই আমি আর মতি এক প্ল্যান করলাম। গভীর রাতে ওনাকে ভূতের ভয় দেখাতে হবে। গত পহেলা বৈশাখে মেলা থেকে কেনা ভূতের মুখোশটা বের করলাম। মতিকে সব বুঝিয়ে বলতেই মতি বলল, ‘বাইজান, বুইড়া বেডা। ফট কইরা মইরা গেলে?’


‘তাহলে তো বেঁচেই গেলাম, মতি। যা, কথা বাড়াইস না।’


রাত ৩টায় মোবাইলে একটা মেয়ের কান্নার সুর গেদু চাচার রুমে গিয়ে বাজাতে লাগলাম। একটু পর চাচা উঠে ‘এই কেডা, এই কেডা’ বলে লাইট জ্বালাতে গেল। কিন্তু লাইট আগেই খুলে নেওয়া হয়েছে। বারান্দার জানালায় মতি সেই মুখোশ পরে ছোট্ট একটি টর্চ জ্বালিয়ে নিজের মুখ দেখাতে লাগল। চাচা জোরে জোরে কী যেন পড়ছে। আমরা সরে পড়লাম। যথেষ্ট হয়েছে। পরদিন সকালে নাশতার টেবিলে চাচাকে দেখেই বুঝলাম সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। আমি আর মতি একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছি, এর মধ্যেই কলিংবেল। উঠে দেখি এক হুজুর টাইপ ছেলে।


‘গেদু চাচা আছে?’
‘তয়োব আইছ?’ এই বলে গেদু চাচা সেই ছেলেকে ঘরে নিয়ে এলো।
গেদু চাচা আব্বাকে বলল, ‘এইটা আমাগো গেরামের পোলা। তোমাদের এই বাসায় খারাপ জিনিসের আছর আছে। তয়োব এইসব ব্যাপারে ওস্তাদ। সে আগামী কয়েকটা দিন আমার লগে থাকব।’
মতি বিড়বিড় করল, ‘কাম সারছে!’



আব্বা বলল, ‘সমস্যা নাই।’
ঠিক সেই সময় হকার পেপার দিয়ে গেল। হেডলাইন বলছে, ‘রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে চাইছে না!’

একটা চুমো


বান্ধবীকে রাতের বেলা বাড়ি পৌঁছে দিতে এসেছে বাবু। দরজার পাশে দেয়ালে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো সে, একটা চুমো খেতে দাও আমাকে।’ ‘কী? তুমি পাগল হলে? এখানে দাঁড়িয়ে না না না!’ ‘আরে কেউ দেখবে না। এসো, একটা চুমো।’ ‘না না, খুব ঝামেলা হবে কেউ দেখে ফেললে।’ ‘আরে জলদি করে খাবো, কে দেখবে?’ ‘না না, কক্ষণো এভাবে আমি চুমো খেতে পারবো না।’ ‘আরে এসো তো, আমি জানি তুমিও চাইছো — খামোকা এমন করে না লক্ষ্মী!’ এমন সময় দরজা খুলে গেলো, বান্ধবীর ছোট বোন ঘুম ঘুম চোখে দাঁড়িয়ে। চোখ ডলতে ডলতে সে বললো, ‘আপু, বাবা বলেছে, হয়তুমি চুমো খাও,নয়তো আমি চুমো খাই, নয়তো বাবা নিজেই নিচে নেমে এসে লোকটাকে চুমো খাবে —
কিন্তু তোমার বন্ধু যাতে আল্লার ওয়াস্তে ইন্টারকম থেকে হাতটা সরায়।’

আজকের কৌতুক : স্বামীর অতীত জানার উপায়


স্বামীর অতীত জানার উপায় এক নারী জ্যোতিষীর কাছে গিয়ে স্বামীর বিষয়ে জানতে চাইলেন- নারী: আমার স্বামী সম্পর্কে কিছু বলুন। জ্যোতিষী: আপনি কি আপনার স্বামীর ভবিষ্যৎ জানতে ইচ্ছুক? নারী: রাবিশ! ওর ভবিষ্যৎ তো আমি ঠিক করব। জ্যোতিষী: তাহলে কী জানতে চাইছেন? নারী: তার অতীত জানতে চাইছি!

 ****

এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ড বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে পিন্টুর একান্ত ইচ্ছা ছিল কয়েকটি- প্রথমত, সঙ্গে থাকবে টাকাভর্তি বাক্স। দ্বিতীয়ত, একটি মোটামুটি ঝামেলা ছাড়া চাকরি। তৃতীয়ত, শান্তির ঘুম। চতুর্থত, কাজ করার স্থানটা হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। পিন্টুর সব ইচ্ছাই আজ পূরণ হয়েছে। সে এখন এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ড।

****

স্বামীর এসএমএসে ক্ষেপে গেল স্ত্রী স্বামী-স্ত্রী ইংরেজি চর্চা শুরু করেছে। যখন-তখন ইংরেজিতে এসএমএস করছে তারা। ফোন করে বলছে, তাড়াতাড়ি উত্তর দিতে। একদিন স্বামী এসএমএস করেছে স্ত্রীকে- স্বামী: হাই! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং ডার্লিং? স্ত্রী: আই অ্যাম ডায়িং… স্বামী: সুইট হার্ট, ডোন্ট ডাই, প্লিজ! হাউ ক্যান, আই লিভ উইদাউট ইউ? স্ত্রী: ইউ ডাফার, ইডিয়ট! আই অ্যাম ডায়িং মাই হেয়ার।

বিয়ার কোম্পানিতে বিয়ার-এর স্বাদ পরীক্ষা

bangla jockes

এক বিয়ার কোম্পানিতে বিয়ার-এর স্বাদ পরীক্ষার জন্য লোক নিয়োগ হচ্ছিলো।
বাজে চেহারার এক মাতাল ইন্টারভিউ দিতে এলো।
কোম্পানির মালিক তাকে দেখেই মনে মনে বাতিলের খাতায় ফেলে দিলেন। কিন্তু ইন্টারভিউ দিতে যখন এসেছে তখন তো ইন্টারভিউ নিতেই হবে। তাই মাতালটিকে প্রথমে এক গেলাস বিয়ার দেওয়া হল, স্বাদ পরীক্ষার জন্য।
মাতাল তার এক চুমুক খেয়েই সব উপকরণের নাম সঠিক বলে দিল।
এটা শুনে মালিকের ভুরু কুঁচকে গেল।
এরপর তাকে আর একটি অন্য ব্রান্ড-এর বিয়ার এক গেলাস দেওয়া হল.....
মাতাল সেটিরও এক চুমুক খেয়ে সব কিছু পারফেক্ট বলে দিল।
মালিকও হার মানার পাত্র নন। মহিলা সেক্রেটারিকে ইশারা করে কিছু বললেন।
সেক্রেটারি এবার একটি গেলাস হিসু করে নিয়ে এসে মাতালটিকে দিল।
মাতাল সেটার এক চুমুক খেয়েই মালিককে বলল--
"খুব সুন্দরী,
বয়স ২৭,
সুগার আছে, তিন মাসের প্রেগনেন্ট .....!!
আমাকে চাকরিটা না দিলে আপনার স্ত্রীকে গিয়ে বলে দেব বাবাটা কে

------------------------------------------------------------

পরীক্ষার খাতায় উত্তর দেয়ার সময়
সর্ব প্রথম এটা লেখা উচিত যে--😇
"এই খাতায় লেখা উত্তরগুলো
সম্পূর্ণ কাল্পনিক,😐
বাস্তবে বইয়ের সাথে মিলে গেলে
এটি নিতান্তই কাকতালীও 😆
এবং এই খাতার লেখক
কোন ভাবেই দায়ী'নয়"


স্কুল জীবনের ভালোবাসা

love of school live

ক্লাসে ম্যাডাম ঢুকেই বলল, " রাকিব তুই নাকি সাদিয়াকে
প্রেমপত্র দিছিস! সাদিয়া তোর প্রেমপত্র পড়ে অজ্ঞান
হয়ে গেছে।" ম্যাডামের কথা শুনে রাকিব এর কলিজা শুকিয়ে
গেলো। সাদিয়া ম্যাডামের একমাত্র মেয়ে। ডাইনী মায়ের
একমাত্র আদরের সন্তান। ম্যাডাম আবার বলল, "কিরে তুই
উত্তর দিচ্ছিস না কেন"? ভয়ে রাকিবয়ের পায়ে কাঁপাকাঁপি শুরু
হয়ে গেলো। যেকোনো সময় প্যান্ট নষ্ট করে ফেলার মতন
অবস্থা।
জীবনে কখনো ম্যাডামের ক্লাসে পড়া দিয়েছি বলে মনে
পড়ে না। ম্যাডাম এমনিতেই আমাকে দেখতে পারে না।
তার উপর তার মেয়েকে প্রেমপত্র দিয়েছি, সেটা পড়ে
বেচারি অজ্ঞান। ম্যাডাম আমার অবস্থা আজ কি করবে
সেটা বুঝার বাকি রইলো না। মনে মনে বিপদের দোয়া
পড়ছি আর নিজের বুকে ফুঁ দিচ্ছি। আল্লাহ এবারের মতন
আমাকে বাঁচাও এরপর থেকে সাদিয়াকে নিজের বোনের
চোখে দেখবো।
ম্যাডাম আস্তে আস্তে এগিয়ে এলো আমার দিকে।ক্লাসের
সবাই সার্কাস দেখার অপেক্ষায় আমার দিকে তাকিয়ে
আছে। ম্যাডাম আমার কাছে এসে চিঠিটা আমার হাতে
দিয়ে বলল, " পড়ে শোনা"। ম্যাডামের কথা শুনে এবার গলা
পর্যন্ত শুকিয়ে কাঠ। আমি লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে
আছি। ম্যাডার তার ডাইনী কণ্ঠে চিৎকার করে উঠে বলল,
"এক্ষণ পড়ে শোনা বলছি।"
আমি চিঠি হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম।
কলিজার বোঁটা সাদিয়া,
কেমন আছো তুমি? জানি তুমি ভালো নেই। তোমার ডাইনী মা
৪৫ মিনিটের ক্লাসে আমাদের যে অবস্থা করে! আল্লাহ
জানে সারাদিন তোমার উপর ঐ ডাইনীটা কতো নির্যাতন
চালায়। তুমি বললে আমি উনার বিরুদ্ধে মামলা করবো।
প্রথমদিন তোমাকে দেখেই আমার বুক কেঁপে উঠেছিল। সেই
কাঁপুনিতে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের কিছু অংশ কেঁপে
উঠে। অথচ মানুষজন বলে সেটা নাকি ভূমিকম্পের কারণে।
কাউকে বিশ্বাস করাতেই পারিনি ওটা আমারি বুকের
ভূমিকম্প।
তুমি জানো সারাদিন শুধু আমি তোমার কথা ভাবি। এতো
ভাবনা যদি আমি গণিতের প্রতি দিতাম তাহলে
আইনস্টাইনের মতন আমারো পকেটে দুইচারটা নোবেল
থাকতো। কিন্তু দেখো আমি নোবেলের কথা চিন্তা না করে
শুধু তোমার কথা চিন্তা করি। কিন্তু তোমার ডাইনী মায়ের
জন্য চিন্তাটাও ঠিকমতন করতে পারি না। হঠাৎ করে
তোমার মা আমার চিন্তার মধ্যে এসে আমাকে লাঠিপেটা
করে আর বলে " ঐ তুই আমার মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করিস
কেন?"
সেইদিন স্বপ্নে দেখি তোমাকে নিয়ে চাঁদে যাচ্ছি
হানিমুন করতে। রকেটে আমি আর তুমি লুকোচুরি খেলছি।
এরমধ্যে কোথা থেকে যেন তোমার মা এসে রকেটের ইঞ্জিন
বন্ধ করে দিয়ে বলে, " এবার খেলা হবে।"
বিশ্বাস করো সাদিয়া, তোমার কথা মনে হইলেই এই হৃয়দের
মধ্যে এনার্জি বাল্ব জ্বলে উঠে। তুমি আবার ভেবো না আমি
৩০০ টাকার এনার্জি বাল্ব ১০০ টাকায় কিনেছি শুধুমাত্র
কোম্পানির প্রচারের জন্য।
আমি ফিলিপ্স বাল্বের কথা বলেছি। যা দিবে তোমাকে
শতভাগ আলো ও দীর্ঘদিনের গ্যারান্টি।
সাদিয়া বিশ্বাস করো এই মনে!!...."
হঠাৎ ধপাস করে কিছু পরে যাওয়ার শব্দ পেলাম। সামনে
তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে।
সবাই মিলে দৌড়াদৌড়ি করে ম্যাডামকে তুলে ডাক্তার
ডাকতে গেলাম।
ম্যাডামের জ্ঞান ফিরলে প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম আমাকে
ডেকে পাঠালেন। উনি বললেন," তুমি নাকি ম্যাডামের
মেয়ে সাদিয়াকে চিঠি দিয়েছ। কি ছিল সেই চিঠিতে
দেখি চিঠিটা আমাকে দেও।" আমি ভয়ে ভয়ে প্রিন্সিপ্যাল
ম্যাডাম কে বললাম "আগে এখানে ডাক্তারকে ডাক দেন
ম্যাডাম।"