অনলাইনে মজার মজার গল্প, বুদ্ধিদীপ্ত কৌতুক, সাম্প্রতিক বিষয়

 

ফাঁদ

মেয়েদের বলা সবচেয়ে বড় মিথ্যা, ‘কী হয়েছে বলো আমাকে, আমি একদমই রাগ করব না।’

এই ফাঁদে পা দিছুইন তো মরছুইন।

 

লাইক

: তোমার ব্যবসা কেমন চলছে?

: জি আম্মা, ভালোই।

: আগে কয়টা লাইক পাইতা, এখন কয়টা লাইক পাও?

: খারাপ না।

: লাইক দিয়ে সংসার চালানো যায়?

: থ্যাংক ইউ, আম্মা।

: থ্যাংক ইউ কেন?

: ভাবতেছি এইটা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিমু।

মাজহার মিথুন

 

জীবন থেকে শিক্ষা

থ্রি ইডিয়ট শিখিয়েছে—‘বন্ধু যখন ফেল করে অনেক কষ্ট লাগে, কিন্তু বন্ধু যদি প্রথম হয়ে যায় তখন আরো বেশি কষ্ট লাগে।’

আমি শেখাচ্ছি—‘বন্ধু যখন বেকার থাকে তখন অনেক কষ্ট লাগে, কিন্তু বন্ধু যখন ভালো চাকরি পেয়ে যায় তখন আরো বেশি

কষ্ট লাগে।’

অনামিকা মণ্ডল

 

ছড়া

কেউ জানে না, আমি তো জানি

তুমি আমার,

কারণ তোমার বাপের আছে

ডিমের খামার।

ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল

 

পজিশন

বন্ধু : সংসারে আপনার পজিশন কী?

স্বামী : সব সময়ই অপজিশন।

খায়রুল বাবুই

 

 

এ যুগের কনসার্ট

একটা কনসার্টে গেলাম সেদিন। গেটে টিকিট দেখালাম। ইভেন্টের অর্গানাইজারের পক্ষ থেকে যে ছেলেটা টিকিট চেক করছে, সে দেখলাম মাথা ঝাঁকাচ্ছে আর টিকিট চেক করছে। আমি ফিসফিস করে বউকে বললাম, ‘এ কই নিয়ে আসলা?’

‘আন্ডারগ্রাউন্ড কনসার্ট এটা। এভাবে মাথা নাড়ানোকে হেড বো করা বলে। এটাই নিয়ম। এটাই স্টাইল।’

‘আমিও ঝাঁকাব?’

গেটের ছেলেটা মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলল, ‘এই গেট না ব্রো। পেছনের গেটে যান। ভুল গেটে চলে এসেছেন।’

আমি বললাম, ‘আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজের সঙ্গে মুখের কথা তো মেলে না। দূর থেকে কেউ দেখলে ভাববে মাথা ঝাঁকিয়ে বুঝি এই গেটের কথাই বলছেন, অথচ আমি কাছ থেকে শুনছি—না, এই গেট না।’

উনি মাথা ঝাঁকানো থামিয়ে এবার আমার দিকে তাকালেন ভালো মতো। আমি তাঁর হাত থেকে টিকিটটা টান দিয়ে নিয়ে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে হাঁটা দিলাম। আশপাশে ড্রামের দ্রুম দ্রুম শব্দ হচ্ছে। হলের ভেতর ঢুকে দেখি, সবাই একইভাবে মাথা ঝাঁকাচ্ছে। একটু পরে বউ আমাকে বলে, ‘তোমার চোখের চশমা কই? ঝাঁকাতে গিয়ে ফেলায়ে দিসো নাকি?’

আমি মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললাম—‘না না, খুলে ব্যাগে রেখে দিয়েছি। এত বোকা না আমি। কী করলে কুল হয় আর কী করলে বেক্কুল হয় আমি জানি।’

হলের ভেতরের এক কর্নারে খাবার বিক্রি হচ্ছে। যিনি বিক্রি করছেন তিনিও মাথা ঝাঁকাচ্ছেন। আমি গিয়ে বললাম, ‘আমাকে এক প্যাকেট মাথা না ঝাঁকিয়ে পপকর্ন দেন। ঝাঁকানির চোটে তো অর্ধেক পড়ে যাচ্ছে আপনার দোকানের ভেতরেই। এটা কি বিজনেস ট্রিক নাকি আসলেই মিউজিক এনজয় করছেন?’

উনি মাথা ঝাঁকানো থামিয়ে আমার দিকে তাকালেন ভালো করে। আমি তাঁর হাত থেকে পপকর্নের প্যাকেটটা টান দিয়ে নিয়ে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে হাঁটা দিলাম। ড্রামের দ্রুম দ্রুম শব্দ চলছে। বউ বলল, ‘চলো যাইগা’।

‘কোন গেট দিয়ে বের হব? সব গেটে দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঙ্কুই তো মাথা ঝাঁকাচ্ছে।’

...কনসার্ট ছিল ভাই আমাদের সময়। বামবার কনসার্ট হয় না আজ কত দিন? ১৫ বছর? ১৭ বছর? হয়তো আরো বেশি। শাহীন স্কুলের মাঠে কনসার্ট হতো। এটা হয়তো এখন অনেকেই বিশ্বাস করবে না। ধানমণ্ডির সুলতানা কামাল কমপ্লেক্সের বাউন্ডারি ওয়াল টপকে কত কনসার্টে যে ঢুকেছি। কানে বাজতে থাকত—‘কতবার ছেড়েছি, ছাড়ব না এবার...বাংলার লাঠিয়াল বাংলার লাঠিয়াল বাংলার লাঠিয়াল।’

সুর কানে আসার পর সেই সাত ফুট ওয়াল থেকে কিভাবে নামব, ভুলে জেতাম। এক লাফে মাঠে নেমে দৌড়। কানে ভেসে আসত, ‘ওগো সোনার মেয়ে...বলো না কী পেয়েছ...হূদয় খুলে আপন ভুলে...ভালো কি বেসেছ...বলো না কী পেয়েছ।’

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসত। সুর উঠতেই থাকত।

‘অর্ধেক পূর্ণিমা রাতে, মেঘের আড়ালে আকাশের লুকোচুরি খেলা, নির্ঘুম রাত শেষে চাঁদের ফাঁসি হয়, সূর্যের আশীর্বাদে ক্লান্ত প্রভাতে, সূর্যের আশীর্বাদে যে পথে পথিক নেই ...’।

বন্ধুর কোলে মাথা রেখে আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে মিলিয়ে নেওয়া। ‘আমার নষ্ট হওয়া একটা পলক/নিজের চোখে তুলে নিলেই বুঝতে তুমি/কষ্ট কাকে বলে!’

...একেকটা কনসার্ট ছিল সো রিফ্রেশিং। পরের দিন নতুন উদ্যম পেতাম। এখনকার মতো ঘাড়ব্যথা নিয়ে বাসায় ফিরতে হতো না। ডাক্তারের পরামর্শে গলায় হালকা হলুদ রঙের শক্ত কলার পরে আগামী সাত দিন থাকতে হতো না। বলছি না, আমাদের জেনারেশনই ঠিক, এই জেনারেশন ভুল। হয়তো আমরাই ব্যাকডেটেড। হয়তো সামনের ২০ বছর পরের কোনো জেনারেশনের ছেলে-মেয়েরা এখনকার জেনারেশনকে এভাবেই হেয় করে বলবে—‘কী বেক্কল জেনারেশন ছিল রে ভাই...শুধু মাথা ঝাঁকাইত! ফুল বডি না ঝাঁকিয়ে শুধু মাথা ঝাঁকানোটা কী খেত না? একদম নট কুল। এই, তোর গায়ের জামা কই? বডি ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে খুলে পড়ে গেল না তো?’

‘না না, খুলে ব্যাগে রেখে দিয়েছি। অত বোকা না আমি। কী করলে কুল হয় আর কী করলে বেক্কুল হয় আমি জানি।’