বারান্দায় দাড়িঁয়ে রাতুল।ঘরে তার এইমাত্র বিয়ে করা নতুন বউ। আসলে সে বুঝতে পারছে না,কি দিয়ে বউয় সাথে কথা বলা শুরু করবে।খুব নার্ভাস! -অই ভাইয়া,তুমি এখানে কি? তোমার রুমে যাও না! -না রে! রুমে যাব না।আজকে তোর সাথে থাকব। -এ মা! কেন ভাইয়া? ভাবী কে ভয় লাগে? -দূর নাহ! কি …কিসের ভয়? -তো! তোতলাও ক্যা? -কই? কই তোতলাইছি?আর এত্ত কথা বলছ কেন? যা থাকব না তোর সাথে! -আরে! ভাইয়া …… রাতুল ছোট ভাইয়ের রুম থেকে বেরিয়ে গেল! মাথা গরম অবস্থায় কখন যে সে তার নিজের রুমে চলে এল,টেরও পেল না। রাতুল কে দেখতে পেয়ে ফারিয়া একটু নড়েচড়ে বসল।ফারিয়া হলো রাতুলের সদ্য বিয়ে করা বউ,যার সাথে কথা বলার ভয়ে রাতুল বারান্দা থেকে রুমে রুমে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাসার সবাই চিন্তিত!রাতুল আসলে করছে কি?? রাতুল ভয়ে ভয়ে ফারিয়ার পাশে গেল!
ফারিয়ার চেয়েও সে বেশি লজ্জা পাচ্ছে! -এহহহমম!! রাতুলের গলা ঝাকাঁনো শুনে ফারিয়া চমকে গেল! এইটা আবার কি? রাতুলও খানিকটা বিস্মিত! এটা কি বের হলো গলা থেকে!! -ফা..ফা..ফারিয়া! -জ্বি! -ভা..ভা..ভালো আছ তুমি? (ফারিয়ার জ্বি শুনে রাতুল আরো ভড়কে গেছে!) -জ্বি,আছি! আপনি এভাবে ঘামতেছেন কেন? রাতুলও অবাক! ঘরে এসি চলছে,কিন্তু সে ঘামছে কেন?? তবু সে কোন মতে উত্তর দিল- -ক..ক..কই না তো! -আপনি কি তোতলান? -নাহ,একদম না! -হুম।কিন্তু এখন তোতলাচ্ছেন কেন? -আসলে হয়েছে কি আমি একটু নার্ভাস ফিল করতেছি! -ওমা,কেন? -আসলে এটা আমার প্রথম বিয়ে তো! তাই… রাতুলের কথা শুনে ফারিয়া হাসছে! খুব জোরে হাসছে সে!রাতুলের বিস্ময়ের ঘোর কটছে না।এত সুন্দর করেও মানুষ হাসতে পারে?রাতুলের হাসি দেখায় ছেদ পড়ল ফারিয়ার কথায়– -কেন? আপনি কি ৪ টা বিয়ে করবেন? (হা হা হা!) -হুম? (ফারিয়ার কথা রাতুল খেয়াল করতে পারে নি!) -কিছু না! এত্ত বোকা কেন আপনি? -আমি বোকা? কিন্তু সবাই তো বলে,আমার বুদ্ধি সুদ্ধি নাকি অনেক ভালো! -নাহ,আপনি হলেন বোকারাম! -ওহ,তাই? রাতুল এখন আর ভয় পাচ্ছে না! তবে সে ফারিয়ার কথায় চমকাচ্ছে! ফারিয়া মেয়েটা এমনভাবে কথা বলছে য তারা প্রেম করে বিয়ে করেছে!
-জ্বি।আচ্ছা,আপনি কখনো প্রেম করেছেন? -নাহ,না তো! তুমি? -হুম করেছিলাম।২ দিনও টিকে নি। -আহা রে! কেন? কি হল ছেলেটার? -উনি মারা গেছে! -ইন্নালিল্লাহ! নাম কি ছিল তার? -আরে আমার দাদাজান আর কি! ফারিয়ার কথা শুনে রাতুল হাসিতে গড়াগড়ি খাওয়ার উপক্রম। -ওহ,আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে! -আপনি কি দাদাজানের মৃত্যুতে বেশি খুশি? -খুশি? হ্যা আবার না! -ওমা।এটা কেমন কথা! -তোমার প্রাক্তন প্রেমিক বেচেঁ থাকলে আমি তো তোমাকে পেতা না! -তা অবশ্য ঠিক! রাতুল এখন ফারিয়াকে বিস্মিত করতে পারছে! -ফারিয়া? -জ্বি। -ভালোবাসার মানে বুঝ? -জ্বি না।আপনি শিখাবেন? -হুম।কেন নাহ? রাতুল ভালোবাসার পাঠদান করছে আর ফারিয়া বাধ্য ছাত্রীর মত মনযোগ দিয়ে শুনছে। রাত বাড়ছে আর বাড়ছে নবদম্পতির প্রেমালাপ! দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হোক সে রাত আর দীর্ঘ হোক তাদের প্রেমালাপ…❤❤❤ ভালো থাকুক ভালোবাসা