ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাট হাতে তামিম ইকবাল আর নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের অনুশীলন ভালো হয়েছে। প্রস্তুতিটা ভালো হলো বাংলাদেশ বোলারদেরও। আগে ব্যাটিং করে ২৯৬ রান তোলে বাংলাদেশ। তামিম করেছেন ৬২ বলে ৬৬ রান। জিম্বাবুয়ে ৪০.১ ওভারে করেছে ৭ উইকেটে ১৮৯ রান তোলার পর আলোকস্বল্পতায় খেলা হয়নি আর।
ডি/এল পদ্ধতিতে ম্যাচ বাংলাদেশই জিতেছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, কত রানের ব্যবধানে এল সেই জয়, সেটি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ দলও জানতে পারেনি। ম্যাচ কর্মকর্তারা নাকি তাদের কিছু জানাননি।
এদিন ব্যাটিং করলেও বোলিং করেননি সাকিব, খেলেননি তাসকিন আহমেদ। কিন্তু এই ‘ভালো’র ভিড়ে একটা অস্বস্তিও থেকে গেছে বাংলাদেশের। বোলিংয়ের সময় প্রথম ওভারেই উঠে গেছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
হারারের হাইফিল্ডের তাকাশিঙ্গা স্পোর্টস ক্লাবে বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গে নেমেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। শুরুটা ধীরগতির করেছিলেন দুজনই। প্রথম ৩৫ বলে ২৩ রান করেছিলেন তামিম, নাইমের প্রথম ৩১ বলে রান ছিল ২০।
১২তম ওভারে গিয়ার বদলেছেন তামিম, চড়াও হয়েছিলেন ফারাজ আকরামের ওপর। সে ওভারে তিন চারের সঙ্গে এক্সট্রা কাভার দিয়ে তামিম মেরেছেন একটি ছয়, একলাফে পৌঁছে যান ৪০ বলে ৪১ রানে। তামিম পারলেও গিয়ার বদলাতে পারেননি নাইম। চিভাঙ্গাকে তুলে মারতে গিয়েছিলেন নাইম, বল তাঁর ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে হলো ক্যাচ! আউট হওয়ার আগে করতে নাইম পেরেছেন ৫২ বলে ২৫ রান। ৮১ রানের ওপেনিং জুটি ভেঙেছে তাতেই।
তানাকা চিভাঙ্গাকে মারা দুই চারে তামিম ফিফটি পূর্ণ করেছেন ৪৬ বলে। ফিফটির পর মেরেছিলেন আরও দুই চার। ওয়েসলি মাধেভেরের বলে আলগা শটে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। শটটা খেলার পর প্রায় মাথায় হাত দিয়েছিলেন, যেন বুঝতেই পারেননি সেখানে ফিল্ডার আছে অথবা তাঁর শটটা সেখানে যাবে!
এরপর দ্রুতই ফিরেছেন লিটন দাস, ৬ বলে ২ রান করে মাধেভেরের বলে ক্রিজ ছেড়ে খেলতে এসে স্টাম্পড হয়েছেন। মোহাম্মদ মিঠুন ৪২ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৯ রান করে স্বেচ্ছা অবসরে গেলেও তিনে নামা সাকিব ছিলেন ধীরগতির, শেষ পর্যন্ত ৬০ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে তিনি মেরেছেন শুধু একটি চার।
ছয়ে নামা মোসাদ্দেক হোসেন করেছেন ৩০ বলে ৩৬, ৩ চার ও ২ ছয়ে। স্বেচ্ছায় অবসরে গেছেন তিনিও। আর চিভাঙ্গার বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৩ বলে ২৮ রান করেছেন আফিফ হোসেন। শেষ দিকে নুরুল হাসানের ১২ বলে ১৮ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অপরাজিত ১০ বলে ১২ রানে ৩০০-এর কাছাকাছি গেছে বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারেই উঠেছে ৯৪ রান।
বোলিংয়ে অবশ্য শুরুতেই অস্বস্তিই হলো বাংলাদেশের সঙ্গী। প্রথম ওভার করতে এসে অ্যাঙ্কেলে অস্বস্তি নিয়ে উঠে গেছেন মোস্তাফিজুর রহমান, এর আগে করেছিলেন ৫ বল। এরপর বরফ দেওয়া হয়েছে তাঁর পায়ে।
অন্য প্রান্তে বোলিংয়ে এসেছিলেন সাইফউদ্দিন, প্রথম উইকেটও পেয়েছেন তিনিই। মাধেভেরে (১৩ বলে ১৪ রান) তাঁর বলে হয়েছেন কট-বিহাইন্ড। পরের ওভারে তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে ফিরিয়েছেন শরীফুল ইসলাম।
বাংলাদেশের নাঈমের মতোই এক ইনিংস এরপর খেলেছেন জিম্বাবুয়ের শেষ ওয়ানডে সিরিজের অধিনায়ক চামু চিবাবা। সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৫১ বলে তিনি করেছেন ১৭ রান। এর আগেই পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়েছিলেন ইবাদত হোসেন। ওয়ানডে স্কোয়াডে না থাকলেও টেস্ট ম্যাচের পর দলের সঙ্গে থেকে গেছেন এই পেসার। প্রথমে ২৯ বলে ৪২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলা ডিওন মায়ার্সকে ফেরান ইবাদত, পরের বলে বোল্ড করেন তিনাশে কামুনহুকামওয়েকে। এরপর সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লকে ফিরিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন।
অষ্টম উইকেটে অবশ্য ব্যাটিং অনুশীলনটা ভালোই করেছেন টিমাইসেন মারুমা ও রিচমন্ড মুতুম্বামি। মারুমা অপরাজিত ছিলেন সমানসংখ্যক বলে ৫৯ রানে, ৩১ বলে ১৬ রান করে তাঁকে সঙ্গ দিয়েছেন মুতুম্বামি।
২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও ইবাদত হোসেন। একটি নিয়েছেন শরীফুল ইসলাম। মোসাদ্দেক ৬.১ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৬ রান, ৭ ওভারে যথাক্রমে ৩৩ ও ৩৯ রান দিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও শরীফুল। ৭.১ ওভারে ইবাদত খরচ করেছেন ৩৭ রান। ৮ ওভারে ৩০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তাইজুল ইসলাম। আর ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়েছেন আফিফ হোসেন।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুক্রবার। এ সিরিজের পর তিনটি টি-টোয়েন্টিও খেলবে বাংলাদেশ।